Join Our Telegram channel! name='keywords'/> সঠিকভাবে কীভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হয়?-জেনে নাও সকল গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনার কৌশলগুলো

Ticker

10/recent/ticker-posts

Ads

সঠিকভাবে কীভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হয়?-জেনে নাও সকল গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনার কৌশলগুলো

একজন উপস্থাপক অথবা উপস্থাপিকা হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি একটি অনুষ্ঠান হোস্ট করেন এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোথাও একটি অনুষ্ঠান বর্ণনা বা মন্তব্য  করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখেন। যখন আপনি একটি ইভেন্ট মন্তব্য করার জন্য নির্বাচিত হন বা আগামীতে হবেন , অথবা আপনি হয়তো ইউটিউব ফেসবুক কিংবা টিক টক এর কনটেন্ট creator  বা নির্মাতা  হয়েছেন অথবা আগামীতে নতুনরা হতে চাচ্ছেন এর জন্য   আপনাকে আগে থেকেই আপনার দায়িত্ব বুঝতে হবে কিভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হবে সেই সমস্ত বিষয়গুলো । আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার দক্ষতা নিখুঁত এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের লোকেদের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ পান। আপনাকে অবশ্যই কথা বলার দক্ষতা ক্রমাগত উন্নত করতে হবে এবং একটি সফল ইভেন্টের জন্য যা প্রয়োজন তা হল অনেক প্রচেষ্টা, প্রস্তুতি এবং ভালভাবে লেখা স্ক্রিপ্ট। নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি সাজানো কিভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হয়, এবং যেকোনো পরিবেশে উপস্থাপনা শুরু করার নিয়ম সেই সমস্ত বিষয়গুলো digital Bangla 360 আজকের আর্টিকেলে তুলে ধরা হলো।



সঠিকভাবে কীভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হয়?-জেনে নাও সকল গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনার কৌশল


উপস্থাপনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কৌশল

আপনারা যারা উপস্থাপনা করতে চান। তারা হয়তো ভাবছেন কিভাবে উপস্থাপনা করতে হয় তবে উপস্থাপনা করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু কৌশলের ওপর অবলম্বন করতে হবে। আপনি খুব সহজেই যেকোনো বিষয়ের উপর উপস্থাপন করতে পারবেন । যেকোন বিষয়ের ওপর সুন্দর উপস্থাপনা করতে পারলে আপনার ওপর মানুষের আগ্রহ তৈরি হবে এবং আপনি এই উপস্থাপনা পেশাটিকে গ্রহণ করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেকেই উপস্থাপনা পেশাটিকে গ্রহণ করে নানা ধরনের অনুষ্ঠানে হোস্ট হিসেবে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে যেমন সোলেমান শুখুর , টেন মিনিট স্কুলের কর্ণধারের উপস্থাপনা দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন কিভাবে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করতে হয়  । উপস্থাপনার কিছু কৌশল নিচে বর্ণনা করা হলো।উপস্থাপনার জন্য অবশ্যই নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। উপস্থাপনার জন্য আগে প্রচারিত বিভিন্ন ধরনের উপস্থাপনার অনুষ্ঠান দেখতে হবে। যে অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করবেন সে অনুষ্ঠানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব কিভাবে সম্প্রচারণ করতে হবে সে বিষয়ের ওপর সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন বা ধারণা নিতে হবে। ভাসার সঠিক ব্যবহার ও শুদ্ধ উচ্চারণ করতে হবে।
মিশ্র ভাষা থেকে বিরত থাকতে হবে।  নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। উপস্থাপকের অবশ্যই কন্ঠ ভালো রাখার জন্য নিয়মিত কন্ঠ  চর্চা করতে হবে যাতে ,শ্রোতাদের কাছে আপনার কন্ঠ সুন্দর এবং ভালো শোনা যায়। আপনি যদি উপস্থাপনা বিষয়টিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন তাহলে অবশ্যই উপস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার। উপস্থাপনা সময় কোন বিষয়ে ভয় না খেয়ে আপনাকে অবশ্যই সামনের দিকে আপনার বক্তব্য প্রদান করে সুন্দর ও সাবলীলভাবে সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে। আপনাকে উপস্থাপনার সময় অবশ্যই আপনার পোশাকে ওপর নজর রাখতে হবে। আপনার পোশাকের বিষয়ে উপর আপনাকে  অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

উপস্থাপনা যেভাবে শুরু করতে হয় 

উদাহরণস্বরূপ দেখুন,সম্মানিত সুধী আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের সামনে আজকে একটি নতুন আর্টিকেল নিয়ে হাজির হয়েছি। আমরা কিভাবে উপস্থাপনা শুরু করব এ নিয়ে তথ্য শেয়ার করেছি আজকের এই অনুচ্ছেদে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোথাও কোন অনুষ্ঠানে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন ব্যক্তি কে উপস্থাপনা করতে হয়। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান উপস্থাপকের উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার হয়। উপস্থাপক একজন ব্যক্তি যিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হুস্ট করেন। একজন নারী বা পুরুষ উপস্থাপক হতে পারে তাই উপস্থাপনার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ভাষা জ্ঞানের উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আজকের এই অনুচ্ছেদি কিভাবে উপস্থাপন শুরু করতে হবে বা উপস্থাপনের শুরু করার নিয়ম এই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি।স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এ ছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে অথবা যে কোন বিবাহ অনুষ্ঠানে বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে  একজন উপস্থাপক যেকোনো অনুষ্ঠানের শুরুতেই তার উপস্থাপনা দিয়েই অনুষ্ঠান শুরু করে ও শেষ করে । অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের সাবলীল ভাষা জ্ঞান, সুন্দর ভাবি উপস্থাপন করে দর্শকের মন অনুষ্ঠানের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে মনোযোগ আকর্ষণ করে সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের। উপস্থাপকের উপস্থাপনার ওপর ভিত্তি করেই দর্শকরা অনুষ্ঠানকে নির্বাচন করে।একজন উপস্থাপকেরাই পারে পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে  ভালোভাবে  থেকে রোমাঞ্চকর করতে। তার সাবলীল ভাষা জ্ঞান সুন্দর সুন্দর উপস্থাপন এবং পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে দর্শককে নানা বিষয়ের ওপর কর্ণপাত করে অনুষ্ঠান থেকে রোমাঞ্চকর তৈরি করতে পারে উপস্থাপক। আজকের এই অনুষ্ঠাতে আপনারা যদি উপস্থাপনা করতে চান। একজন উপস্থাপকে সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব হলো অবশ্যই অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে বুঝে নিতে হবে। কি কি বিষয়ের ওপর আজকের এই অনুষ্ঠান পরিচালিত হবে সেটা আগেই তাকে সুন্দর ভাবে তালিকা বদ্ধ করতে হবে   । কিভাবে উপস্থাপনা করবেন কিভাবে উপস্থাপনা শুরু করবেন এ বিষয়ে নিয়ে হয়তো ভাবছেন?আমাদের এই অনুচ্ছেদে কিভাবে উপস্থাপনা করতে হবে বা উপস্থাপনা শুরুর কৌশল কি রকম হওয়া উচিত এ নিয়ে বিস্তার তুলে ধরা হলো  করা হয়েছে সফল উপস্থাপক দের মতামতের  উপর ভিত্তি করে ।


আরো পড়ুন: সকল লাভজনক ব্যবসা সারা জীবন করতে এখানে ক্লিক করে দেখুন

(1) দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করা

অনুষ্ঠানের শুরুতেই যদি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার মতো কোনো কিছু করা যায়, তবে বাকি অনুষ্ঠান ভালো যাবার  পাকাপোক্ত সম্ভাবনা তৈরী হয়। সফল উপস্থাপকদের  পরামর্শ হচ্ছে “দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করছি”- এর মতো কথা না বলে এমন কিছু করা যেন দর্শক নিজ থেকেই কৌতুহলী হতে আপনার উপস্থাপনার কথা গুলোমন দিয়ে শুনে।
উদাহারণস্বরুপ, অনুষ্ঠানের সাথে যায় এমন একটা মজার কৌতুক দিয়ে শুরু করা যেতে পারে, অথবা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একটা সংক্ষিপ্ত ভিডিও দিয়ে। দর্শক বিনোদন পেলেই ধরে নাও তুমি একটা সুন্দর অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত!

(২) দর্শকদের কল্পনা করতে বা ভাবতে লাগিয়ে দেয়া

একজন মানুষের মস্তিষ্ক যখন সতেজ  থাকে, তার মনোযোগ আকর্ষণ করাও সহজ হয়। যদি অনুষ্ঠানের শুরু করা যায় একটা কল্পনা দিয়ে, তাহলে কিন্তু মন্দ হয়না!
এক্ষেত্রে হয়তো আপনারা  অনুষ্ঠানের থিমের সাথে সামঞ্জ  একটা “কেমন হতো যদি অমুক ব্যাপারটা এমন না হয়ে তেমন হতো?” -জাতীয় প্রশ্ন দিয়ে শুরু করতে পারো, তাহলে তোমার দর্শকও কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই তোমার কল্পনা করা পরিস্থিতিটা নিজেরা কল্পনা করা শুরু করে দিবে। ব্যাস, পেয়ে গেলে একসাথে অনেক অনেক দর্শকের মনোযোগ!

(3) ভবিষ্যত বা অতীত দিয়ে শুরু করতে পারেন

রাজনীতিবিদদের বক্তৃতায় এই ব্যাপারটি অনেক লক্ষ্য করে থাকবে। তারা অতীতে কোনো খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে বর্তমানে এসে পৌঁছেছেন, অথবা ভবিষ্যতে কী কী সাফল্য অর্জন করবেন, এমন কথা দিয়ে শুরু করেন। মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে এটি হতে পারে তোমার মাধ্যম!

***উদাহারণস্বরুপ ধরো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে তুমি আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান উল্লেখের মাধ্যমে শুরু করতে পারো, অথবা মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করতে কীভাবে অবদান রেখেছেন  তা নিয়ে বলতে পারো অর্থাৎ যে বিষয় নিয়ে আপনার অনুষ্ঠান সে বিষয়ে কিছু কথা বলে দর্শকদের মন আকর্ষণ করতে হবে ।কোনো পরিস্থিতি অথবা ঘটনা বর্ণনার সময় তোমার কাজ হচ্ছে তুমি যা-ই বলছো, দর্শক যেন তা কল্পনা করতে শুরু করে দেন। এক্ষেত্রে সুন্দর বাচনভঙ্গি, শুদ্ধ উচ্চারণ আর বিরামচিহ্নের সঠিক ব্যবহার তোমাকে সাহায্য করবে।

(৪) প্রবাদ অথবা সঙ্গতিপূর্ণ কবিতার লাইন দিয়েও শুরু করতে পারেন 

অনুষ্ঠান শুরুর বাক্য হিসেবে কবিতার লাইন অথবা কোনো প্রবাদ ব্যবহার করা নতুন কিছু নয়। কবিতার লাইন প্রাসঙ্গিক হলে অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য অনেকাংশে বেড়ে যায়।তুমি যদি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের স্লাইল ব্যবহার করো, তাহলে বলার সময় স্লাইডেও লাইনগুলো তুলে দিতে পারো। এটি দর্শককে বুঝতে, কল্পনা করতে সাহায্য করবে।

(৫) গল্প অথবা ঘটনা দিয়ে শুরু করতে পারেন 

এটা অনেকটা প্রথম কৌশলের মতোই। এখানেও তোমার মূল কাজ হলো দর্শকদের আপনার  ভাবের জগতে কৌশলে নিয়ে যাওয়া। অনুষ্ঠানের মূল ধারণা আর অনুষ্ঠানের তাৎপর্য বোঝার ক্ষেত্রে কাজে আসবে এমন একটা সত্যিকার অথবা কাল্পনিক গল্প দিয়ে তুমি শুরু করতে পারো। গল্প কিন্তু মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করার একটা ভালো হাতিয়ার! রসিকতার মধ্য দিয়েও গল্প বলা যায়।অনুষ্ঠানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা থাকলে সেটা শুরুতে বলার চেষ্টা করতে পারো।

(৬) নিজের অথবা দর্শকদের জীবন নিয়ে গল্প বলা

শ্রোতারা গল্প শুনে উপভোগ করেন, এটা তো আমরা জানলামই। আর গল্পটির সাথে যখন দর্শক-শ্রোতা নিজের জীবনের মিল পাবেন, তখন গল্পটি হয়ে উঠবে আরো অসাধারণ সুন্দর।উপস্থাপক হিসেবে তোমার নিজের কোনো ঘটনা, অথবা দর্শকদের জীবনের সাথে মিলে যায় এমন কোনো ঘটনা দিয়ে শুরু করতে পারো। এতে করে দর্শকের সাথে তোমার একটা সম্পর্ক তৈরী হবে অনুষ্ঠানের শুরুতেই।

(৭) দর্শকদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা

এটা অনুষ্ঠান শুরু করার আরেকটি সুন্দর উপস্থাপনা কৌশল। যেকোনো অনুষ্ঠানগুলোতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেই সবসময় শুরু করা হয়। এছাড়াও যেকোনো অনুষ্ঠান শুরু করার সময় প্রশ্ন করলে অনুষ্ঠানে সবার সম্মিলিত আকর্ষণে অংশগ্রহণ থাকে।


সেরা ‌১০টি গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনার কৌশল

নতুন উপস্থাপকদের জন্য পরামর্শ তো জানা হলো, এবার আসি উপস্থাপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস-এ। একজন সফল উপস্থাপক হতে হলে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখাতে হবে।

(১) আত্মবিশ্বাসী হতে হবে

উপস্থাপনায় অনেকসময় তোমার অভিজ্ঞতা নেই, এমন কাজও তোমাকে করতে হতে পারে। আবার অনেকসময় দেখা যায় অনেক অভিজ্ঞরাও কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খান। অভিজ্ঞতা থাকুক আর না-ই থাকুক, আত্মবিশ্বাস থাকাটা অনেকটা অপরিহার্য বা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । পাব্লিক স্পিকিং এর ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা সবাই জানি। উপস্থাপনার ক্ষেত্রেও কিন্তু এর ব্যাতিক্রম না!একজন উপস্থাপককে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে হয়, আর এটা করার জন্য নিজের ওপর বিশ্বাস থাকাটা জরুরী।

(২) একজন সফল উপস্থাপক কিন্তু আকর্ষণের শিকার  

কী, অবাক লাগছে? অ্যাটেন্সন   সিকার শব্দটাকে আমরা মোটামুটি নেতিবাচক একটা গুণের কাতারেই ফেলি। কিন্তু তুমি যদি একজন সফল উপস্থাপক বা উপস্থাপিকা  হতে চান, তাহলে এটেনশান সিকার করা শিখে নাও। সফল উপস্থাপকরা ও উপস্থাপিকারা  বলতে চাইছি- একটা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা শুরুর পরমুহূর্ত থেকে উপস্থাপকের প্রধান কাজ থাকে দর্শক/ অতিথির মনোযোগ ধরে রাখা। আর এটেনশান সিকারি হওয়া এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ। 

(৩) পোশাকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা

পোশাক কি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ? উত্তর হচ্ছে- হ্যাঁ। ধরো তুমি একটা  অনুষ্ঠানে একটা এমিনেমের লোগো ওয়ালা শার্ট পরে উপস্থাপনা করতে গেলে। তোমার কল্পনাও করতে পারবেননা যে ব্যপারটা কতোটা অদ্ভূত দেখাবে? দর্শকও হয়তো তোমাকে গ্রহণ করবেন না।কিভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হয়
পোশাকের ক্ষেত্রে তোমাকে নিজের ইচ্ছা থেকে দর্শকের পছন্দের দিক বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। একজন উপস্থাপকের প্রতিটি সুক্ষ্ম বিষয় মাথায় রেখেই পোশাক নির্বাচন করা উচিত। অনুষ্ঠানের ভাবের সাথে যায় এমন মার্জিত পোশাক পরা উচিত। যার মাধ্যমে অনেক বেশি   দর্শকের কাছে  ইতিবাচক ভাব আসে।

(৪) স্পষ্ট উচ্চারণে বা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে

উপস্থাপনার ক্ষেত্রে বাচনভঙ্গির থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো স্পষ্ট, বোধগম্য ভাষায় কথা বলা। উপস্থাপকের কণ্ঠ নিচু না হওয়াই ভালো। চেষ্টা করতে হবে কথার স্পষ্টতা যেন এমন হয় যে একজন অমনযোগী শ্রোতাও ঠিকমতো শুনতে পান।উপস্থাপনার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে সকল দিক দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে হবে। । কারণ, আপনার  কথার মাঝে বিরাম থাকলে দর্শকের কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু তোমার কথা বোঝা না গেলে পুরো অনুষ্ঠানেই সমস্যা হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে তোমার জটিলতা কাটিয়ে উঠতে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে হবে। আর উপস্থাপনা সময় তোমার কথাগুলো রেকর্ড করবে। পরে সেটি শুনে তুমি নিজেই নিজের ভুলের জায়গা গুলো বুঝতে পারবে।

(৫) দর্শকের দিকে তাকানো

যেকোনো অনুষ্ঠানেই হোক উপস্থাপনার সময়  , আই কন্টাক্ট কিন্তু থাকা চাই-ই। । তুমি যাদের লক্ষ্য করে কথা বলছো, আত্মবিশ্বাসের সাথে তাদের দিকে তাকিয়েই তোমার কথা বলতে হবে।এখন ধরো একটা অনুষ্ঠানে অনেক অনেক মানুষ। উপস্থাপনার সময় তুমি দিশেহারা হয়ে পড়ছো যে কাকে ছেড়ে কার দিকে তাকাবে। এই ঝামেলা একবার আমার সাথে হয়েছিলো কিশোর আলোর একটা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে গিয়ে। আমি যা করলাম, পুরো দর্শকসারিকে তিনটা ভাগে ভাগ করলাম, এরপর প্রতি ভাগ থেকে সামনে-পেছনে মিলিয়ে কয়েকজনের চেহারা মনে মনে ঠিক করে নিলাম। এরপর কথা বলার সময় তাদের দিকে বেশি বেশি তাকিয়ে কথা বললাম।

(৬) গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বা যুক্তি  সহকারে কথা বলা 

অনেকে উপস্থাপনার সময় পুরো একটা স্ক্রিপ্ট হাতে নিয়ে সেটা দেখে দেখে বলে। ফলে যা হয়, দর্শকের দিকে তাকানোই হয়না। (আমি ছোটবেলায় স্কুলে বেশ কয়েকবার এমন করেছি।) আমার পরামর্শমতে, একটা পুরো স্ক্রিপ্ট হাতে না রেখে, মূল বিষয়গুলো একটা ছোট্ট কাগজে টুকে রাখা যায়। এতে করে কোনো কথা বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকেনা, পাশাপাশি একাধারে স্ক্রিপ্টের দিকে না তাকিয়ে দর্শকের দিকেও মনোযোগ দেয়া হয়। এখন চাইলে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে সেগুলো সাজিয়ে নেওয়া  পারে।

(৭) হাসিমুখ কথা বলা 

একদিন শীতের সন্ধ্যায় আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। কোনো একটা কারণে মন বেশ খারাপ ছিলো। এক চাচি আমার পাশ দিয়ে যাবার সময় আমার ঘড়িতে কয়টা বাজে জিজ্ঞেস করলেন। আমি ওনাকে সময় বললাম, আর উনি আমার দিকে তাকিয়ে সুন্দর করে হাসলেন। হঠাৎ করে আমার মন কেমন ভালো হয়ে গেল! আমি বুঝলাম, একজন মানুষের হাসিমুখ অনেক বড় পরিবর্তনও আনতে পারে।হাসিমুখ তোমার উপস্থাপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিবে, তোমার কথার প্রতি দর্শকের মনোযোগ বাড়িয়ে দিবে, আর অনুষ্ঠানে একটা ইতিবাচক ভাব এনে দিবে।শুধু উপস্থাপনাই না, আমার পরামর্শ হলো, সবসময়ই হাসার চেষ্টা করবে। তুমি হাসছো মানে তুমি তোমার নিজেকে আর আশেপাশের মানুষকে ভালো থাকতে সাহায্য করছো।

(৮) যা বলছি, তা বলা যাবে তো?

এমন অনেক ব্যাপার থাকে যেগুলো নিয়ে কথা না বলাই ভালো। একজন উপস্থাপকের সবসময় চোখ-কান খোলা রাখবে, উপস্থাপনার সময়  কী বলতে হবে জানা যেমন জরুরী, কী বলা যাবেনা জানাটাও তেমন জরুরী।

(৯) পরিস্থিতি সামাল দিতে জানা

এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা বৈশিষ্ট্য, যেটা সব উপস্থাপকের আয়ত্তে আনতে হয়। অনেকসময় অনুষ্ঠান যেমন চিন্তা করা হয়েছিলো অমন নাও হতে পারে, ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা। উপস্থাপকে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। কোনোভাবেই উত্তপ্ত হওয়া চলবেনা।

(১০) শেষ ভালো যার.. সব ভালো তার 

একজন বা দুইজন উপস্থাপক অনেক চেষ্টার মাধ্যমে ধরো যেকোনো  অনুষ্ঠান পরিচালনা করছে, কিন্তু শেষে এসে উপসংহার বা শেষের দিকে এসে  টানেনি। তখন দেখা যাবে ওই সময়ে  অনুষ্ঠানে তেমন আকর্ষণ ব্যাপার থাকবেনা। তাই যে কোন অনুষ্ঠানের শেষের দিটা যাতে ভালোভাবে সম্পূর্ণ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে গুরুত্ব সহকারে। এর সাথে সহানুভূতি আর আবেগপূর্ণ কিছু কথা জুড়ে দিয়ে সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের ইতি টানাতে হবে ।

আশাকরি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে আপনারা উপস্থাপনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদের দেখার সুযোগ করে দিন এবং এ বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ